News Report In Details

#19. প্রয়োজনীয় সকল যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দুইটি পরিদর্শক টিমের সন্তোষজনক রিপোর্ট দেওয়ার পরও মাগুরা মেডিকেল কলেজ বন্ধের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সভা আয়োজন ও মহাসড়ক অবরোধ

2 months ago

প্রয়োজনীয় সকল যোগ্যতা, পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা থাকা সত্ত্বেও এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দুইটি পরিদর্শক টিমের সন্তোষজনক রিপোর্ট দেওয়ার পরও মাগুরা মেডিকেল কলেজ বন্ধের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আজ প্রতিবাদ সভা আয়োজন করে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী এবং মাগুরার সর্বস্তরের জনগণ। জেলা প্রেস ক্লাবে ব্রিফিংয়ের পর একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মানববন্ধন ও মিছিল শেষে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

আজ রবিবার দুপুরে অনুষ্ঠিত কর্মসূচি থেকে মাগুরা মেডিকেল কলেজ অযৌক্তিকভাবে বন্ধ করা হলে বৃহত্তর কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়া হয়। দুপুরে শহরে বিক্ষোভ মিছিল শেষে ভায়নার মোড়ে মানববন্ধন করে অবরোধ করে বিক্ষুব্ধরা। অবরোধের ফলে ঢাকা-যশোর মহাসড়ক ও ঢাকা- চুয়াডাঙ্গা মহাসড়ক প্রায় ১ ঘন্টা বন্ধ হয়ে যায়। এতে মহাসড়কে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়।এর আগে মাগুরা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক খান আমিনুর রহমান পিকুল ও আলমগীর হোসেন , জেলা জামায়াতের আমীর এম বি বাকের, মাগুরা প্রেসক্লাবের সভাপতি অধ্যাপক সাইদুর রহমান,সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শফিক, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ইঞ্জিনিয়ার মো: সেলিম ও মাগুরা মেডিকেলের ইন্টার্ন চিকিৎসক ডা.দীপ্ত দেব, প্রতিষ্ঠানের শেষ বর্ষের ছাত্র নঈমুল হোসেনসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ বক্তব্য রাখেন। অবিলম্বে এ ধরনের ষড়যন্ত্র থেকে সরে না আসলে বৃহত্তর আন্দোলনের ঘোষণা দেন স্থানীয় বক্তারা। একইসঙ্গে অতি দ্রুত মাগুরা মেডিকেল কলেজ কে স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান।

শেষ বর্ষের ছাত্র নঈমুল হোসেন বলেন, “বিএমডিসির সকল প্রয়োজনীয় নীতিমালা পূরণ এমনকি ওয়ার্ল্ড ডাইরেক্টরি অফ মেডিকেল স্কুলসে স্বীকৃতি পাওয়া একটি প্রতিষ্ঠানকে মানহীন দাবি করে তা বন্ধের ষড়যন্ত্র কখনোই কাম্য নয়।”

 

উল্লেখ্য, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম কিছু মেডিকেল কলেজ বন্ধের ঘোষণা দেওয়ার পর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শক দল সেসব মেডিকেল কলেজ পরিদর্শন করে রিপোর্ট জমা দেয়‌ । মাগুরা মেডিকেল কলেজ সম্পর্কে ইতিবাচক রিপোর্ট পাওয়ার পরও এটি বন্ধের ষড়যন্ত্রে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে‌ । শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে- “২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠার কয়েক বছর পর থেকেই উন্নত একাডেমিক ও অবকাঠামোগত মান বজায় রেখেছে মাগুরা মেডিকেল কলেজ।

আমাদের কলেজ যা মাগুরা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালের সাথে যুক্ত। আমাদের মেডিকেল কলেজে ৩ টি মাল্টিমিডিয়া লেকচার গ্যালারি, ৮ টি টিউটোরিয়াল রুম, ১ টি সমৃদ্ধ সেন্ট্রাল লাইব্রেরী, ১ টি ই-লাইব্রেরী (পেডিয়াট্রিক ক্লিনিকাল ক্লাসরুমে), ১টি ডিসেকশন রুম, ১টি মর্চুয়ারি, ১টি এনাটমি মিউজিয়াম, ২ টি ল্যাবরেটরি, সুসজ্জিত আধুনিক টিচার্স লাউঞ্জ, ১ টি কনফারেন্স রুম, ইন্ডোর গেম সামগ্রী সমৃদ্ধ ছেলে মেয়েদের আলাদা আলাদা ২ টি কমন রুম, ৪ টি প্রশাসনিক কক্ষ, ২ টি স্টোর রুম, শিক্ষক, ছাত্র এবং ছাত্রীদের জন্য আলাদা আলাদা প্রয়োজনীয় ওয়াশরুম রয়েছে। আমাদের ২ টি বহুতল ভবন বিশিষ্ট ছাত্রাবাস, ১ টি আধুনিক বহুতল ভবন বিশিষ্ট ছাত্রীনিবাস এবং ইন্টার্ন চিকিৎসকদের থাকার ব্যবস্থা ইতোমধ্যে করা হয়েছে। এছাড়া নিয়মিত বিভিন্ন প্রকার কলেজ সংস্কার কাজ চলমান। অর্থাৎ, একটি মেডিকেল কলেজ পরিচালনার জন্য ন্যূনতম অবকাঠামোগত যে সুযোগ সুবিধা প্রয়োজন তা মাগুরা মেডিকেল কলেজে বিদ্যমান।বর্তমানে আমাদের মেডিকেল কলেজে বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের বিভিন্ন পর্যায়ের ৩৯ জন সুযোগ্য কর্মঠ শিক্ষকগণ রয়েছেন। আমাদের শিক্ষকগণ কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে শিক্ষাদান চালিয়ে যাচ্ছেন।একাডেমিক ক্ষেত্রে, আমাদের কলেজ নিয়মিতভাবে সন্তোষজনক ফলাফল অর্জন করে আসছে। বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য যে, আমরা রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পাশের হার বিবেচনায় দুইবার প্রথম স্থান অধিকার করেছি, যা আমাদের শিক্ষার গুণগত মানের প্রতিফলন। আমাদের শিক্ষকেরা শিক্ষার্থীদের যথাযথ নির্দেশনা ও যত্ন প্রদান করেন, যা শক্তিশালী একাডেমিক ভিত্তি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

এছাড়া, আমাদের কলেজের সাথে সংযুক্ত ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল রয়েছে, যেখানে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা গুরুত্বপূর্ণ ক্লিনিক্যাল প্রশিক্ষণ লাভ করছেন। হাসপাতালটিতে প্রতিদিন সহস্রাধিক রোগী আসেন, উন্নত অপারেশন থিয়েটার কমপ্লেক্স রয়েছে যা শিক্ষার্থীদের জন্য ব্যবহারিক অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ সৃষ্টি করে।

আমাদের কলেজ বন্ধ হয়ে গেলে এটি শুধুমাত্র ৩৫০ জন শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎকে ব্যাহত করবে না, বরং এই অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য ব্যবস্থাও ব্যাহত হবে। আমাদের একাডেমিক সাফল্য, শিক্ষকের মান ও ক্লিনিক্যাল অবকাঠামোর বিবেচনায়,, মাগুরা মেডিকেল কলেজ বন্ধের যে কোনো সম্ভাব্য সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার জন্য আমরা জোরালোভাবে অনুরোধ জানাই। আমাদের শিক্ষক সীমাবদ্ধতা কাটানোর জন্যে শিক্ষক নিয়োগের প্রস্তাবনা জানাচ্ছি এবং মাগুরা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ডিপিপি দ্রুত অনুমোদনের জন্য বিনীতভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি।”